সহীহ মুসলিম বিড়াল নিয়ে হাদিস

ইসলাম

বিড়াল মুসলমানদের কাছে খুব প্রিয় এবং পবিত্র প্রাণী। ইসলামে বিড়ালদের প্রতি সদয় আচরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখানে বিড়াল নিয়ে হাদিস উপস্থাপন করা হল:

বিড়াল নিয়ে হাদিস

বাংলা: একবার নবী (সাঃ) বললেন, “বিড়াল তোমাদের মধ্যে একটি প্রাণী।”

আরবি: عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “إنما هي إحدى الطوافين عليكم أو الطوافات”.

ব্যাখ্যা: এই হাদিসে নবী (সাঃ) বিড়ালকে ঘরের সাথে সম্পর্কিত একটি প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, যা আমাদের কাছে আসা এবং আমাদের সাথেই থাকার জন্য প্রস্তুত।

উৎস: জামে তিরমিজি

আরও পড়ুন : নামাজের ভিতরে বাহিরে ১৩ ফরজ কি কি


বিড়াল নিয়ে ইসলামিক ক্যাপশন

বাংলা: নবী (সাঃ) বলেছিলেন, “একজন মহিলা বিড়ালকে বন্দী করে রেখেছিল এবং তাকে খাওয়ানো বা পান করতে দিচ্ছিল না। তার কারণে সে জাহান্নামে প্রবেশ করেছে।”

আরবি: عن ابن عمر رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “عذبت امرأة في هرة حبستها، فلم تطعمها ولم تسقها، ولم تتركها تأكل من خشاش الأرض”.

ব্যাখ্যা: এই হাদিসে দেখানো হয়েছে যে, বিড়ালের প্রতি নিষ্ঠুরতা বা অবহেলা আমাদেরকে আল্লাহর কাছে দণ্ডিত করতে পারে।

উৎস: বুখারি

আরও পড়ুন : ধৈর্য্য নিয়ে হাদিস । ধৈর্য নিয়ে উক্তি হাদিস


সহীহ মুসলিম বিড়াল নিয়ে হাদিস

বাংলা: নবী (সাঃ) বলেন, “যদি কেউ বিড়ালকে খাওয়ায়, তবে তার জন্য আল্লাহ তা’আলা জান্নাতে পুরস্কৃত করবেন।”

আরবি: عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “في كل كبد رطبة أجر”.

ব্যাখ্যা: এই হাদিসে বোঝানো হয়েছে যে, প্রাণীদের প্রতি সদয় আচরণ আল্লাহর কাছে মূল্যবান।

উৎস: মুসলিম

আরও পড়ুন : ১০০ টি শিক্ষামূলক ছোট হাদিস আরবি সহ


বিড়াল পালা নিয়ে হাদিস

বাংলা: নবী (সাঃ) বলেন, “বিড়াল যতক্ষণ না কিছু খাবে, তখন পর্যন্ত তার উপর কোনো নিষেধ নেই।”

আরবি: عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “إنها ليست بنجسة”.

ব্যাখ্যা: এখানে বিড়ালের পরিচ্ছন্নতা এবং তাদের খাওয়া-দাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে, যাতে আমরা তাদের প্রতি ন্যায়পরায়ণ হতে পারি।

উৎস: আবু দাউদ


কালো বিড়াল নিয়ে হাদিস

বাংলা: নবী (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি বিড়ালের প্রতি দয়া করে, সে আল্লাহর দয়ার অংশীদার।”

আরবি: عن جرير رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “من لا يرحم لا يرحم”.

ব্যাখ্যা: এখানে দয়া ও সহানুভূতির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে, যা বিড়ালের প্রতি আমাদের আচরণে প্রতিফলিত হওয়া উচিত।

উৎস: সুনান ইবনে মাজাহ


বিড়ালের প্রতি দয়া এবং ন্যায়

বিবরণ: এই হাদিসগুলো আমাদের শিখিয়েছে যে বিড়াল এবং অন্যান্য প্রাণীদের প্রতি দয়া ও সদয় আচরণ করা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাদের উচিত, বিড়ালদের প্রতি স্নেহশীল এবং সদয় হওয়া, কারণ তাদের প্রতি সদয়তা আমাদের ইমানের একটি পরিচায়ক। আল্লাহ আমাদের এই শিক্ষাগুলো গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন।

বিড়াল সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

ইসলামে বিড়াল সম্পর্কে বেশ কিছু ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। ইসলামী ঐতিহ্য অনুযায়ী:

  1. বিশুদ্ধতা: বিড়ালকে “পবিত্র” প্রাণী হিসেবে গণ্য করা হয়। হাদিসে উল্লেখ আছে যে, বিড়াল নাপাক নয় এবং এটি মুসলিমদের জন্য অশুদ্ধতা সৃষ্টি করে না। ফলে, বিড়াল ঘরের মধ্যে থাকতে পারে।
  2. প্রিয়তা: প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (স.) বিড়ালদের প্রতি বিশেষ স্নেহশীল ছিলেন। তিনি বিড়ালদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং তাদের জন্য খাদ্য ও জল সরবরাহ করতে উৎসাহিত করেছেন।
  3. হাদিস: একটি প্রসিদ্ধ হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, একজন নারী বিড়ালের কারণে শাস্তি পেয়েছিল কারণ সে বিড়ালটিকে বন্দী রেখেছিল এবং খাবার দান করেনি। অন্যদিকে, আরেকটি নারী বিড়ালকে পোষ্য হিসেবে পালন করেছিল এবং সে স্বর্গে প্রবেশ করেছিল।
  4. সহানুভূতি: ইসলাম মানুষকে প্রাণীদের প্রতি দয়া ও সহানুভূতি দেখাতে উৎসাহিত করে। বিড়াল বা অন্য যেকোনো প্রাণীকে নির্যাতন করা ইসলামিক শিক্ষার বিরুদ্ধ।

সুতরাং, ইসলাম বিড়ালদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে এবং তাদের যত্ন নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করে।

বিড়াল পালন করা কি জায়েজ?

হ্যাঁ, ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিড়াল পালন করা জায়েজ। ইসলামে বিড়ালকে পবিত্র এবং ভালবাসার যোগ্য প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিড়াল পালন করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মনে রাখা উচিত:

  1. যত্ন ও সেবা: বিড়ালকে যথাযথ যত্ন এবং খাদ্য দিতে হবে। তাদের খাবার, পানি এবং স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করা জরুরি।
  2. নিয়মিত পরিষ্কার: বিড়ালের স্থান এবং যন্ত্রপাতি নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে, যাতে পরিবেশ স্বাস্থ্যকর থাকে।
  3. নিষ্ঠা ও সহানুভূতি: বিড়ালের প্রতি সহানুভূতি এবং স্নেহ প্রদর্শন করা উচিৎ। প্রাণীটির প্রতি অত্যাচার বা অবহেলা করা ইসলামিক শিক্ষার বিরুদ্ধে।
  4. অন্য প্রাণীর প্রতি সম্মান: বিড়ালকে পালনের সময় অন্য প্রাণী এবং মানুষের প্রতি সম্মান ও দয়া প্রদর্শন করতে হবে।

সুতরাং, বিড়াল পালন করা ইসলামে জায়েজ এবং এটি করতে হলে সঠিক দায়িত্বশীলতা পালন করা উচিত।

নবীজির বিড়ালের নাম কি ছিল?

নবী হজরত মুহাম্মদ (স.)-এর বিড়ালের নাম ছিল মুহা। এই বিড়ালটি নবীজির খুব প্রিয় ছিল এবং তিনি তাকে বিশেষ স্নেহ ও যত্ন দিয়েছিলেন। মুহা বিড়ালটি নবীজির সঙ্গে সময় কাটাতো এবং ইসলামী ঐতিহ্যে এর প্রতি নবীজির স্নেহের বহু উদাহরণ পাওয়া যায়।

বিড়াল মারা কি জায়েজ?

ইসলামে বিড়াল মারা সাধারণত জায়েজ নয়, বিশেষ করে যদি সেটি নির্যাতন বা অযথা কারণে হয়। বিড়ালের প্রতি ইসলামে বিশেষ দয়া ও সদাচার প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিচে উল্লেখ করা হলো:

  1. নির্যাতন নিষিদ্ধ: প্রাণী হত্যা বা নির্যাতন করা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। যেকোনো প্রাণীকে অযথা হত্যা করা ইসলামিক শিক্ষার বিরুদ্ধে।
  2. সামাজিক ও পরিবেশগত দায়িত্ব: বিড়াল বা অন্য যেকোনো প্রাণীকে হত্যা করার আগে তার জীবন এবং সামাজিক ভূমিকা বিবেচনায় নেওয়া উচিত।
  3. সুস্থতা বা বিপদ: যদি কোন বিড়াল রোগাক্রান্ত হয় বা মানুষের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠে (যেমন, মারাত্মক রোগ ছড়ানোর ক্ষেত্রে), তখন চিকিৎসা বা চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু ঘটানো প্রয়োজন হতে পারে। তবে, এই অবস্থায়ও, প্রাণীর প্রতি সহানুভূতি এবং যত্ন প্রদর্শন করা উচিত।
  4. বিভিন্ন মতামত: বিভিন্ন ইসলামী আলেম এবং মুফতি এই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত থাকতে পারে, তাই স্থানীয় ইসলামিক নেতার সঙ্গে আলোচনা করা উচিৎ।

সারসংক্ষেপে, বিড়াল মারা সাধারণত জায়েজ নয় এবং এ ক্ষেত্রে ইসলামী শিক্ষা ও নীতি অনুযায়ী সদাচার এবং দয়া প্রদর্শনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *